মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৪৯ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ নোয়াখালীর সেনবাগে গণধর্ষণের শিকার দুই সন্তানের জননী হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন। মামলা তুলে নিতে আসামিদের হুমকিতে ভেঙে পড়েছেন ওই গৃহবধূ।
ওই নারী জানান, বৃহস্পতিবার সেনবাগ থানায় গণধর্ষণের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। পুলিশ ওই রাতেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বীজবাগ ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বারসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে।
আসামি গ্রেফতারের পর তাদের লোকজন হুমকি ও মামলা তুলে নেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। হুমকিতে তার পরিবার আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তিনি ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক নাবিলা চৌধুরী জানান, শুক্রবার বিকেলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন গণধর্ষণের শিকার ওই নারী। তার চিকিৎসা সেবা চলছে। ধর্ষণের ঘটনার সাতদিন পর পরীক্ষা করতে আসায় ধর্ষণ আলামত নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
সেনবাগ থানার ওসি (তদন্ত) ইকবাল বাহার জানান, গণধর্ষণ মামলায় ১১ আসামির মধ্যে ৪ জন সরাসরি ধর্ষণ করেছে ১ জন পাহারা দিয়েছে। বাকী ৬ জন ধর্ষণ ঘটনার সালিশ বৈঠক করে ধামাচাপা দেয়া, ধর্ষিতার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়া ও তাকে খারাপ নারী হিসেবে আখ্যা দিয়ে বেধড়ক পিটুনি দিয়ে আহত করার অপরাধে আসামি করা হয়েছে। ৫ জনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত ১০ দিন আগে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে ওই গৃহবধূ সেনবাগের কাজীরখিল স্বামীর বাড়ি থেকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট বাবার বাড়িতে চলে যান। পরে ঝগড়ার বিষয়টি নারীর স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু সেনবাগ উপজেলার কাজীরখিল গ্রামের দিদাকে অবগত করেন। দিদার গত ৫ সেপ্টেম্বর তাকে ফেনী পার্কে দেখা করতে বলেন। ওই দিন সকালে ফেনী পার্কে তার সঙ্গে দেখা করেন গৃহবধূ।
দিদার তাকে সারাদিন বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে রাতে স্বামীর বাড়ি পৌঁছে দেয়ার কথা বলে সেনবাগ উপজেলার কাজীরখিল গ্রামের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে দিদার ও তার ৩ সহযোগী রাতভর নারীকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু বকর ছিদ্দিক শালিস বৈঠকে নারীর কাছ থেকে সাদা কাগজ স্বাক্ষর নিয়ে তাকে চরিত্রহীনা আখ্যা দিয়ে মেম্বারসহ ৩-৪ জন লাঠি দিয়ে বেদম পিটিয়ে আহত করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
Leave a Reply